শূন্যতা জানতে হলে

শূন্যতা জানতে হলে

মনে করুন- কোনো এক পরাযান টানতে টানতে
তোলা হল মহাকাশের সিংহাসনে, তারপর
উড়াল খড়ের মতো; মায়া মুছে দেখো-
কোনো ছায়া নেই, অস্তি নেই। হয়তো সকলে চায়
বৃষ্টি, বা তুলার মতো কিছু, কিন্তু কোনোটাই
দেখা যাবে না। দেখবেন শুধু ঝরছে শূন্যতা!

স্মৃতিরূপ

জাদুবিশ্বাসের কলে ধানের শব্দ
খইয়ের মতো ফুটে অগ্নিঝরা ধান
শিকার সন্ধানে থাকা টোটেমের গান
তুমি কি কখনো শুনেছো অংশশ্রুত বাণ?
সেইসব গহন পাঁচালি, পাড়া জুড়ানো
মন তাড়ানো পাথরপাতায় লেখা
আংটা পোড়ানো উন্দালের কথা
নিথর হিম উপমার কড়ি ও ডিটান।

পথ বলে পরিচয়

যে পথে কথা, পরিচয়
সে পথেই জানি হিংসা-
-দহন-ক্ষয়,
আন্ধার পথ কাছে এসে চুপিচুপি বলে
নিশানায় নেই থির, বান্ধা কোন্ খানে
কীভাবে আর হয়- নিশ্চয়
সঙ্গী হলাম হাওয়ার গানে
দূর থেকে কাছে এলে
জলের টানে, শিকার বনে
জানতে হল মেঘের ভর
দূরের যে জন দূরেই রইলো
প্রশ্ন কেবল- কুটুম হতে সাঁতার লাগে
ব্যর্থ তবে অংক শেখার শখ
বালিকণায় যাপনগান;
তবে মানুষ কোথায়, মানুষ কী হয় পর!

বিপরীত সুন্দরে আছি

কে কারে ঠেলে রথে
কে কারে পার করে
ভিন্ কিছু মনে লয়ে
টানাটানি চলে
দেখা যত ঝিলমিল তনু
তত খিল মারে
হেসে হেসে এচকা টানে
মনে মনে আলগা থাকে,

কাছাকাছি মিছামিছি
বাঁকাপথ লীলা
কার তরে অইলো চুরি
বুঝলে না মনভোলা,

আহারে রঙের দিন
আইব কোন বালা
নিজ ঘরে নিজে নাই
হাওয়া উলামেলা।

কলঙ্ক গাথা

সকলই জিগায় মোরে জেনেবুঝে তোড়ে
বাও জেনে কে না-যায়, ভাসে কোন দূরে
এ তো এক আবোধ্যা হারায় নীল জলে
রকমফের গল্পসুতায় যে কেউ বলে কথা
নীড় থুইয়া পাখি মরছে কার বাড়ে জ্বালা
ঝকমকানি শব্দ শুনো আড়ালেরই গাথা
জানা কেবল তুংতাং শুনো কলজে ব্যথা

গলেছি, ভেসেছি নেই আকুল পাথার
জ্বলছি সেই খাড়ি থেকে অথৈ আন্ধার।

প্রিয়, তোমার আদি-অন্ত্য

বৃষ্টির প্রথম ছোঁয়া
বৈরী বাতাসে তোমার খোলা উঠানে
ঝরঝর,
মেঘের ঠোঁট থেকে ঝরছে লালারেণু
জিরাধানের ঘ্রাণ,
একান্তে তুমি সাগরের বান-বাতাড়ের মতো
উষ্ণ হতে পারো।
স্পর্শ-লাবণ্যে ঘামের ঝরা
পাখি হয়ে উড়ে যায়, তুমি ছুঁয়ে থাকো
কামদেব গাছেরই ছায়া;
মনে আছে তোমার,- কাজলদীঘির নীলপদ্ম
দুলেছে আনন্দে যখন, প্রথম চুম্বনের সূর্যবিন্দু;

তবুও মুছে না বেহায়া পিদিমের দাগ;
আবারও হোক বৃষ্টিমুখরতা
তাপিত নিঃশ্বাসে সাঁকো ইশারা তোমার।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *