অভাবের মুদ্রা

নির্ঝরতা

মেহগনি বৃক্ষে কচিপাতার সমারোহ, আর পথে-বিপথে
শুকনো পাতারা যেন ব্রুনাই নদীর ভাসমান বন্দর

সূর্যাস্তের এনামেল পেইন্ট বার্জার করে রেখেছে আকাশ।

গোরস্থানে এলে
নির্ঝরতা, পাখির কাশিদা, কাঠবিড়ালির খুনশুটির মাঝে,
বাষ্পীয় চোখের জল স্ক্যানিং করে প্রিয় মানুষের মুখ

আতাফল

বৃষ্টির সাইবার গেম আকাশের পাড়ায়
ঘাটে বাঁধা সিড়িগুলো যেন একে একে গিলে ফেলছে কেউ

সময় অসময়ে বসে দেখি, তামাটে শরীরের নিরন্ন মানুষেরা
এখানে স্নান করতে আসে

তাদের উচ্ছ্বাসে ছিটকে ওঠে পানি শস্যহীনা বৃষ্টির পায়ে

দূর সাদা ফুলের কাঁটাবন সকালের নাস্তায় পাউরুটিতে মাখা
মাখনের মতো

তুমিও যদি বা অচেনা মেয়ের মতো, বসতে সিঁড়ির পশ্চিমে
কানাঘুষোপ্রিয় প্রতিবেশিনী বলুন কেমন হত

ঐ শ্যামলী শোভার অভ্যন্তরে এক বিপিনবিহারী খয়েরি বৃক্ষ
জড়িয়ে কাঁদে

হাত বাড়িয়ে কাকে যেন ডাকি নিঃসংকোচে বৃষ্টিতে ভিজে
শূন্যতার ত্রিকোণধাঁধাঁয়

আতাফল লাল হয়ে আছে

অভাবের মুদ্রা

শিমুলের ডালে কোকিল ডাকলে দক্ষিণ বাড়ির কোকিলটা ফিরে তাকায়
উত্তর থেকে আসা ভিন্ন কোকিলের আর্তনাদ!
প্রান্তর ভেঙে এত কোকিলের ডাক ভীষণ আন্দোলিত করে মাটির খনন
চৌদিক স্তব্ধ দূরে কাগজের ঠোঙ্গা উড়ে যাবার আওয়াজ

আবার শুরু হয় শ্রেণীচেতনা সজাগ কোকিলের ডাক
সূর্য ডোবার অন্ধকার নেমে আসছে অভাবের মুদ্রায়

অন্তর

নিঃসঙ্গ জীবন খণ্ডগুলো বিস্কুটের মতো চায়ে ভিজে উঠছে
চৈত্রের সন্ধ্যায় কেউ থাকে কি লুসিফারের প্রান্তরে!
মন যেন মুক্তি পায় ঘুমের ভেতর
ফস্কে যাওয়া ই-মেইল খুঁজি সাপের বিবরে তালবনে
পুকুরের জলে হাত বুলিয়ে তোমার মুখখানি খোঁজে আমার অন্তর

সেন্সর

হাতের আঙ্গুলের সেন্সর গাছের চূড়া কম্পিত করে
এইসব মুহূর্তে মৌটুসী, পতঙ্গরা কোথায় জোট বাঁধে?
মিল্কিওয়ে-ফেরত বিজ্ঞানী নোটবুক হারিয়ে উদভ্রান্ত স্পেস-সেন্টারে
নরম বালিশের স্বাধীনতা পার্শিয়ান বিড়াল ঘুরে ফিরে পায় রাত-দিন
তবু সন্ধ্যামালতী ফুলের ঘ্রাণ সঞ্চারিত হোক হৃদয়ে হৃদয়ে

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *