দুধের গজল

দুধের গজল

নিস্তব্ধ গভীর রাত
সীমাহীন নিরব জিকির,
স্থানান্তর হয় নখের টোকায়
তসবীর গুটিসংখ্যা
জানান দেয় নির্দিষ্ট জপের

বিড়ালের জিভের ডগায়
চটকায় দুধের গজল,
বাতেনী কৌশল মতো তসবীর দানা
একে একে হয়ে যায় পার
যতবার ইচ্ছে জাগে মনে, ততবার

থাকে শুধু মায়া আর
বরকতময় আয়ুমাখা মুখোমুখি।

কালেমা মানব

মেঘে আর হাওয়ায় সলজ্জ সংলাপ
মনে মনে মুমিনের ধ্যানের প্রলাপ

ফেরেশতা লোভ দেয় পুণ্যে
পাহাড়ি প্রভাতে
ইসমে আজম গহীনের স্তরে—
এইসবে সর্বোচ্চ আনন্দ বার্তা
—পাঠমগ্ন মায়াজালে হরফে জযম

লজ্জার সৌন্দর্যে নামে পূর্ণ হিকমত
নামে জ্ঞানপ্রলোভনে বিচলিত পাখি
নেশাগ্রস্ত কালেমা মানব
জ্যোতি হাঁকে মুত্তাকীনে মাখামাখি।

হাতপত্র

কৈশোর স্পন্দনে ছিল ঝড়ের মহড়া
দ্রুত পথটেনে চলা খুব প্রেমেমোড়া

হাতপত্র হস্তান্তর হলে রাজ্য শাসনের পালা
সহজ নিয়মে ছিল শাসকের ফরমান
বাহকের পত্রে প্রজাদের ভাগ্য ফালাফালা।

কিশোরের মনে আঁকা
আদরে সাদরে মাখা
রাজাহীন প্রজাহীন ছুটেচলা নদী,
গোপনে কখন ঢুকিবে সে
পুস্তক পৃষ্ঠায় রেখে দেয়া কৌতূহলী মর্ম
কি সেই আলাপ আলপনা
কত কত শব্দরঙে মাখা
উদ্দাম উদ্ধত কাঁচা হাতে লেখা হাতপত্র
গর্জে ওঠা মনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে যত্রতত্র।

স্নান

কত নদী ইতিহাস হয়
ইতিহাস উড়িয়ে সে চলে

শিলাদেবী ঘাটে স্নান সেরে
ফেরেনা সাধুর বউ,
চাঁদগোনা শেষ হলে—অবশেষে
গুরুগৃহে ফিরে আসে কেউ।

প্রীতিপেন্ডুলাম

ঝুঁকিপূর্ণ ভরবেগে দ্রুতচলা প্রীতিপেন্ডুলাম
ঘরে ঘরে সব গ্রামে বিরহ বিলাপ
সাথে এক মিথ্যে কুড়নো আয়না,
তাতে নেই কিষাণ-কিষানি
আছে কিস্তিবন্দি বধু ঋণবিক্রিয়ায়
নেই শতযুগ হেঁটেচলা প্রথার ঐতিহ্য
শাশ্বত সরল আত্মীয়তার বায়না।

যৌথ পরিবার ভেঙে চূড়মার
মিটিমিটি জ্বলে কৃষিপরিবার
মেলা নেই খেলা নেই
হালখাতার মচ্ছব নেই
ছনছাউনির ঘর নেই
আছে শুধু মুখ-মুখোশের কৈফি খেলা
লেপ্টে থাকা ঘরকুটুমের মস্ত অবহেলা!

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *