হো ইয়ং-জা’র কবিতা

হো ইয়ং-জা দক্ষিণ কিয়ন্সাং প্রদেশের হ্যামিয়াং শহরে ১৯৩৮ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি সুকমিয়ং মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় এর ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ থেকে স্নাতক এবং পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। বর্তমানে তিনি সিউলে সোংশিন মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় এর কোরিয়ান ভাষা ও সাহিত্য বিভাগে অধ্যাপনা করছেন। তাঁর অনেকগুলো কাব্যগ্রন্থ এবং নানা ধরনের সংকলনগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থগুলো হচ্ছে, ‘চিনচন’ (শুধু তোমার চোখের জন্য, ১৯৭১), ‘পিনুটুলপান ই কোরোকাজিয়ন’ (শূন্য মাঠের ভেতর দিয়ে হাঁটা, ১৯৮৪), ‘কোটপিনুল নাল’ (ফুল ফোটার দিন, ১৯৮৭), ‘আরুমডাউমুলউহাইয়ু’ (সুন্দরের জন্য, ১৯৮৯) এবং ‘আমচোংই মুনসিন’ (গাঢ় নীলে উল্কি, ১৯৯১)। ১৯৮৬ সালে তিনি ‘Woltan Literary Award’ লাভ করেন।
এখানে অনূদিত কবিতাগুলোর ইংরেজি অনুবাদ করেছেন কিম জং-গিল।

শাদা তোয়ালে

আমি কুঁকড়ে উঠি।
শাদা তোয়ালে দিয়ে মুখ মুছি
ভয়ে
যদি আমার দুঃখে ভরা লজ্জাকর জীবনের
ছাপ পড়ে যায় মুখে।

আমি কুঁকড়ে উঠি।
শাদা তোয়ালে দিয়ে হাত দুটি মুছি
ভয়ে
যদি আমার লজ্জাকর জীবনের ঝুলকালি
লেপটে থাকে হাতে।

শরৎ

তারা এখন কোথায়
সেই সব বজ্র-ঝলকানো পুরুষেরা
যাদের প্রতিটি পদক্ষেপে
জেগে ওঠে তুমুল উত্তেজনা

আর তাদের শিস্, ওহ্ সেই সুর
চাঙা করে তোমাদের হৃদয়?

শরতের এই মাঠ
ক্ষয়িষ্ণু সাম্রাজ্য এখন,
যার পাহারায় রয়েছে
ছিন্ন ডালের উপর হেলান দেওয়া
কাকতাড়ুয়া

বুড়ো সৈনিকের মতো
টিকে আছে একাকী।

ঝিঁঝি পোকার প্রতি

ঝিঁঝি পোকা
ও ঝিঁঝি পোকা
কেঁদো না, তুমি আর কেঁদো না।

তুমি যদি এভাবে
ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকো
গভীর শোকে

আমার হৃদয়
বরফের মতো
ফেটে যাবে নির্ঘাত

আমার হৃদয়
বেলে-পাথরের মতো
সত্যিই ভেঙে গুড়িয়ে যাবে।

পীড়ন

নোংরা গন্ধ ছড়িয়ে ডোবায়
মনোরম মেঘ হয়ে
ফের আকাশে ফিরে যায় জল।

পোকা-মাকড়ে খাওয়া জীর্ণ পাতাগুলো
চোখ ধাঁধানো রঙে
ঝলমলিয়ে ওঠে শরতে।

ব্যথাময় গ্লানিময়
নিদারুণ এই
জীবনও কি

কোনো একদিন
ফোটাবে রাশি রাশি ফুল?
উষ্ণ, প্রিয় কোনো গোলাপি শিখা?

বীজ কুড়নো

শরতের বাগানে
কিছু বীজের জন্য অধীর হয়ে
হাত রেখেছিলাম পেয়ালায়।

সেই দূর অতীত থেকে
আমাদের বুড়ো মায়ের মতো শরতের চারাগুলো
দিনের পর দিন ঝড়ো বাতাস আর
বৃষ্টির আঘাতে আঘাতে জর্জরিত!

খুব ব্যস্তভাবে
রাস্তাগুলো দিয়ে আমি
ইতস্তত হেঁটে গিয়েছিলাম

কিন্তু আমার ফেরার পথে
কিছুই মেলেনি
কেবল জীর্ণ-শীর্ণ, নোংরা একটি শরীর।

তুমি লালন করেছিলে তবে
এইরকম
বিশ্বস্ত ফলবান সোনালি জীবন!

শরতের বাগানে
যৌবনের শ্রম থেকে আমি কিছু বীজ চেয়েছিলাম;
আমার হাতের আদৌ কোনো
লজ্জাবোধ নেই।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *