হে প্রিয় কুকুরগণ

ঘুনপোকা

বহুদিন পর
মানুষের সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম
দেখলাম মানুষের মুখ
শত শত ভাঙন নিয়ে
ছায়ার ভেতর ডুবে যাচ্ছে…

টেনে তুলতেই
ছিঁড়ে ছিঁড়ে এলো

জীবন, সম্পর্ক ও প্রেম

যার উপর দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে
অদৃশ্য
১টি ঘুনপোকা

উচ্চতা

চিরদিন
উঁচু পাহাড়ের পথ একা হয়ে যায়
পাহাড় অপেক্ষা করে, দেখে—
কেউ তার দিকে এগিয়ে আসছে কিনা

কারণ পাহাড় তার উঁচুতে
সুস্বাদু ফল
ও দূরের দৃশ্যকে দেখার উচ্চতা
জমা করে রাখে

ওখানে একবার কেউ পৌঁছাতে পারলে
পৃথিবীর অনেক দূরত্বই তখন ছোট হয়ে আসে

সৈন্যদের প্রতি

যুদ্ধ শেষ। সৈন্যরা তুমুল আনন্দে বাড়ি ফিরছে

অভিনন্দন জানাতে গোলাপ নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে
কারো মা
কারো বাবা
কারো প্রিয়তমা
কারো ছোট্ট শিশু

তারা জানে, হয়তো জানে না—

ফিরে আসা এই সৈন্যটি খুন করেছে
কারো মা
কারো বাবা
কারো প্রিয়তমা
কারো ছোট্ট শিশু

অদূর সূর্য ক্রসকেটে
এইমাত্র দুটি কাক ল্যাম্পপোষ্টে ওড়ে এসে বসলো
একটি আরেকটিকে বললো— দেখ— হন্তারক ঐ হাত
গোলাপ স্পর্শ করা মাত্রই পাপড়িগুলো কেমন
চিৎকার করে রক্তে ভরে ওঠছে

এমন রক্তমাখা খুনিহাতে
সৈন্যগুলো— কীভাবে তার সন্তানকে আদর করবে
চুমু খাবে?

হে প্রিয় কুকুরগণ

গৃহপালিত নয়— রাস্তাায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হে প্রিয় কুকুরগণ
গুড মনিং— সুবাসিত চোখে রক্তিম ভোর তুমিই দেখেছ

আর প্রভুকানা কুকুরগুলো ভাতের থালায় মুখ ঢেকে
মুখস্থ করছে খুনের আরাম

গৃহপালিত নয়— রাস্তায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা হে প্রিয় কুকুরগণ
আমার পক্ষ থেকে গ্রহণ করুন সালাম আদাব
সুবাসিত সূর্যের ক্রসফায়ার তুমিই দেখেছ;
আর সত্যের আয়ু খেয়ে বিবেক গলিত মানুষের ভিতর আমি
কী যেন দেখে ফেলেছি

মানুষ দেখলে কেবলি এখন হাসি পায়… ঘুম পায়

পৃথিবী— মানুষ ও ঈশ্বর

বিস্ময় নিয়ে একদিন
উল্কা আগুনের তারকারাজি
মানুষের সিজদায় লুটিয়ে পড়তো
লুটিয়ে পড়তো— ফেরেস্তা, জ্বীন
এবং পরিচয়হীন ঈশ্বরও
ধীরে ধীরে মানুষের জিম্মায়— বেঁচে ওঠলো

মানুষ বললো— ‘তিনি আছেন’ তিনি হইলেন
এই বলার আগে স্বয়ং ঈশ্বরও কিছু ছিলেন না

২.
কোটি কোটি বছরের পিচ্ছিল বিচ্ছুরণে
নৃত্যরত পাজরের ঘাম বুনে
মানুষ হয়ে ওঠলো শহর—সভ্যতা ও
আয়ুযাপন সৌরপথ

অথচ আজ বহুদিন ধরে মানুষ নৃশংসতায়
পৃথিবীর উদিত ভোর খোঁজে পাওয়া যাচ্ছে না

তাই, পৃথিবী ও ঈশ্বরের খোঁজ করছি
তাদের কি দেখেছেন কোথাও?

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *